মাতৃ ছায়ায় কোমলমতি শিশুদের  শিক্ষাদান | কামনা শিশু সেন্টার

স্টাফ রিপোর্টার মনির খান, লোহাগড়া, নড়াইল।

কবি কামনা ইসলাম ১৯৭৯ সালে নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার বসুপটি গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। তাঁর পিতার নাম আব্দুল জলিল শেখ, মাতার নাম রিজিয়া জলিল। তিনি তাঁর পিতা – মাতার প্রথম সন্তান। তিনি খুব সাধারন ভাবে জীবন -যাপন করেন। তাঁর দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে, হৃদয় ও বাঁধন। স্বামী মোঃ রেজাউল ইসলাম তিনি একজন শিক্ষক। কামনা ইসলাম ও একজন কবি এবং শিক্ষিকা ।

 

কবি কামনা ইসলাম কম পক্ষে এক হাজারের ও বেশি কবিতা লিখেছেন। হৃদয়ে বাঁধন তাঁর প্রথম প্রকাশিত কবিতার বই।প্রকাশ কাল ২০১৬। এছাড়া একক ও যৌথ বইয়ের সংখ্যা ২০ টি।তাঁর কবিতা গুলো দেশ – বিদেশের পাঠকদের হৃদয় ছুয়েছে। তিনি রেডিও বাংলাদেশ বেতার খুলনা কেন্দ্রের একজন কবিতা পাঠক।

তিনি নিজের চেষ্টায় লোহাগড়ায় গোপীনাথপুর গ্রামে কামনা শিশু সেন্টার নামে একটি বহুমুখী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। তিনি ইসলাম শিক্ষায় এম,এ পাশ করে গরীব শিশুদের লেখাপড়ার সহযোগীতা করেন। সমাজের সকল শিশুই তাঁর কাছে সমান। জীবনের শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত শিশুদের মাঝে থাকতে চান।

তিনি কবিও কবিতার ভুবন ২য় প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও আন্তর্জাতিক গুণীজন সংবর্ধনা ২০২০ পেয়েছেন।
নতুন তারা কবি সমাবেশ ও বনভোজন এবং গুণীজন সম্মাননা ২০২০ পেয়েছেন। কবিতা ও মানব কল্যাণে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি মেঠো বাংলা সাহিত্য ও সাংস্কৃতি সংস্থা বঙ্গবন্ধু একাডেমি থেকে বিশেষ পুরষ্কার পেয়েছেন ।

কয়েক বছর আগের কথা,
কামনা ইসলাম একটি স্কুলের সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন, সেখানে ছাত্র কালেকশন করতে হতো তাকে
প্রতিদিন সকাল, দুপুর, বিকাল এমন কি রাত নয়, দশটা পর্যন্ত বাসা বাড়িতে গিয়ে ছাত্র ছাত্রী সংগ্রহ করতেন, ভালোই লাগে তার, কষ্ট ভুলে যাই যখন একটা দুইটা ছাত্রের সন্ধ্যান পায়।
কামনা ইসলামের সাথে থাকেন আরো কয়েকজন শিক্ষক আট, দশ জনের একটা টিম। তার প্রধান শিক্ষক ও মাঝে মাঝে এই টিমের সাথে যেত।
একদিন প্রধান শিক্ষক কে বলছিল স্যার একটা কথা বলবো,

স্যার বললেন, বলেন তখন স্কুলের অবস্থা অনেক ভালো প্রায় দেড় থেকে দুই শত ছেলে মেয়ে আমরা জোগাড় করতে পেরেছি,

কামনা ইসলাম বলেন স্যার আমাদের পাশে একটা অবহেলিত এলাকা আছে, যেখানে অনেক ছেলে মেয়ে কিন্তু ওরা স্কুল মুখি নয় চলেন আমরা ওই পাড়ায় যেয়ে কিছু ছেলে মেয়ে আমাদের স্কুলে ভর্তি করি। তাহলে ওরা ও লেখা পড়া শিখবে, এলাকার উন্নয়ন হবে, মানুষ মানুষের জন্য, এই কথাটা তখন ভুল প্রমানিত হলো, কামনা ইসলাম অবাক হল, আমরা কেমন শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছি, শিক্ষা কি শুধু টাকা রোজগারের জন্য? 

একজন মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে থাকার জন্য নয় কি? স্যার আমার মুখের ওপর বললেন, না ওই পাড়ার কোন ছেলে মেয়ে আমার স্কুলে আসবেনা।
আপনার যদি প্রয়োজন হয় গরীবের ছেলে মেয়ে পড়াতে তাহলে নিজেই একটা স্কুল করেন।
সেখানে শুধু গরীবের ছেলে মেয়ে পড়াতে পারবেন,
স্যারের এই কথাটা তার জীবনে আর্শীবাদ হয়ে এলো।

স্যারের স্কুল যখন স্বয়ং সম্পূর্ণ তখন স্যার কামনা ইসলাম কে ও বাদ দিলেন তার স্কুল থেকে।
প্রথমে ভেঙে পড়েছিল অনেকটা, তারপর শক্ত হতে লাগলো আর স্যারের সেই আর্শীবাদীয় কথাটা বারবার কানে বেজে উঠতে লাগলো

(আপনি গরীবদের নিয়ে একটা স্কুল করেন)
সত্যি শুরু করলো গরীবদের নিয়ে একটা স্কুল।
যেখানে, যার কাছে যাই, সেই বলে ওদের কি ব্রেন আছে?ওরা কি লেখা পড়া শিখবে, তুমি ওই পাড়ায় স্কুল করেছ কেন?

আসলে ই ওরা স্কুল মুখি নয়, তাই বলে কি ওরা লেখা পড়া শিখবে না, কামনা ইসলাম সকলকে হারিয়ে দিয়েছে, ওরা লেখা পড়া শিখবে মানুষের মত মানুষ হবে, এই পাঁচটি বছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে সকল শক্তি, আশা, ভালোবাসা দিয়ে ওদের কাছে ডেকেছে, ওদের মত সব সময় ওদের পাশে থেকে এখন মহান আল্লাহ অশেষ রহমতে ওরাই লেখা পড়া করছে, স্বতঃস্ফূর্তভাবে তার কাছে ছাত্র-ছাত্রীরা তার সন্তানের মত। অত্র স্কুলে ২০০ জনের মতো ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে।

মাননীয় এমপি মাশরাফি বিন মর্তুজা,ও ডিসি সাহেব, ইউএনও সাহেব, আপনাদের কাছে
অত্র স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা কামনা ইসলাম স্কুলটির সার্বিক উন্নয়নের জন্য, একটু সাহায্যের হাত বাড়ানোর জোর দাবি জানিয়েছেন।